Saturday, July 25, 2009

বাংলা বিভাগ

আজি এই আকুল আশ্বিনে
মেঘে-ঢাকা দুরন্ত দুর্দিনে
হেমন্ত-ধানের খেতে বাতাস উঠেছে মেতে,
কেমনে চলিবে পথ চিনে?
আজি এই দুরন্ত দুর্দিনে!
দেখিছ না ওগো সাহসিকা,
ঝিকিমিকি বিদ্যুতের শিখা!
মনে ভেবে দেখো তবে এ ঝড়ে কি বাঁধা রবে
কবরীর শেফালিমালিকা।
ভেবে দেখো ওগো সাহসিকা!
আজিকার এমন ঝঞ্ঝায়
নূপুর বাঁধে কি কেহ পায়?
যদি আজি বৃষ্টির জল ধুয়ে দেয় নীলাঞ্চল
গ্রামপথে যাবে কি লজ্জায়
আজিকার এমন ঝঞ্ঝায়?

হে উতলা শোনো কথা শোনো,
দুয়ার কি খোলা আছে কোনো?
এ বাঁকা পথের শেষে মাঠ যেথা মেঘে মেশে
বসে কেহ আছে কি এখনো?
এ দুর্যোগে, শোনো ওগো শোনো!
আজ যদি দীপ জ্বালে দ্বারে
নিবে কি যাবে না বারে বারে?
আজ যদি বাজে বাঁশি গান কি যাবে না ভাসি
আশ্বিনের অসীম আঁধারে
ঝড়ের ঝাপটে বারে বারে?

 


শেষের কবিতা--- রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর
কালের যাত্রায় ধ্বনি শুনিতে কি পাও।
তারি রথ নিত্যই উদও
জাগাইছে আন্তরীক্ষে হৃদয়স্পন্দন,
চক্রে-পিষ্ঠ আঁধারের বক্ষফাটা তারার ক্রন্দন।
ওগো বন্ধু,
সেই ধবমান কাল
জড়ায়ে ধরিলো মরে ফেরি তার জাল--
তুলে নিল দ্রুতরথে
দুঃসাহসী ভ্রমণের পথে
তোমা হতে বহু দূরে।
মনে হয়, আজস্র মৃত্যুরে
পার হয়ে আসিলাম
আজি নবপ্রভাতের শিখরচূড়ায়--
রথের চঞ্চল বেগ হাওয়ায় উড়ায়
আমার পুরানো নাম।
ফিরিবার পথ নাহি;
দূর হতে যদি দেখ চাহি
পারিবেনা চিনিতে আমায়।
হে বন্ধু বিদায়।